থার্ড ইঞ্জিনিয়ার রুকনের বাড়িতে আহাজারি, দিশেহারা মা ও স্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার:

ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে অপহরণ হয়েছেন নেত্রকোনার মো. রুকন। তিনি অপহৃত জাহাজ এমভি আব্দুল্লার থার্ড ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত ছিলেন। তাকে ফিরে পেতে পরিবার জুড়ে চলছে আহাজারি।

রুকন সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা ইউনিয়নের বাঘরোয়া গ্রামের মিরাজ আলীর ছেলে। জিম্মি হওয়ার পর থেকে সন্তানের কোনো খবর না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন বাবা মিরাজ আলী ও মা লুৎফুর নাহার। তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠেছে এলাকার পরিবেশ। জানা যায়, মিরাজ আলী ও লুৎফুর নাহার দম্পতির পাঁচ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ রুকন উদ্দিন।

রুকনের বড় ভাই কৃষক সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘নিজে টাকার জন্য পড়াশোনা করতে পারিনি। কোনো রকমে কৃষি কাজ করে রুকনকে পড়াশোনা করিয়েছি। আমাদের পরিবারের অনেক ঋণও আছে। ভাই টাকা পাঠালে অল্প অল্প করে দেনা শোধ করতাম। আগামী ২২ তারিখে তিন লাখ টাকা পাঠানোর কথা ছিলো। কিন্তু এর মধ্যেই এতো বড় বিপদ।’


রুকনের স্ত্রী তানিয়া তানি একটি স্কুলের শিক্ষিকা। বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় থাকছেন বাবার বাড়িতেই।


রুকনের মা লুৎফুর নাহার বলেন, ‘স্ত্রী তানিয়া তানির সাথে কথা বলে রুকন জানায় তাদের শিপ জলদস্যুরা সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আর হয়তো কথা বলতে পারবে না। এই কথা শুনে তানিয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমি আমার ছেলেকে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাই সরকারের কাছে।’

স্থানীয় লিটন চন্দ্র শীল বলেন, ‘জাহাজ মালিক এবং সরকারের কাছে একটাই চাওয়া নাবিকরা যেন নিজের ঘরে ফিরে আসে। তাদের পরিবারের অবস্থা এখন নাজেহাল। অতিদ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুরা বাংলাদেশি জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে সেটি সোমালিয়া উপকূলের দিকে নিয়ে যায় তারা। জাহাজটিতে ২৩ বাংলাদেশি নাবিক জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন।


জানা যায়, এস আর শিপিংয়ের অধীনে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি পরিচালিত হতো। এরআগে ২০১০ সালেও একই প্রতিষ্ঠানের জাহাজ এমভি জাহান মনি সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে। দীর্ঘ ৩ মাস পর ২৬ নাবিকসহ জাহাজটি মুক্ত হয়। জাহাজের মালিক পক্ষ থেকে জানানো হয়, এবারও জাহাজ এবং নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *