আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরাইল থেকে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির ত্রাণ সরবরাহ উত্তর গাজায় পৌঁছাতে একটি নতুন স্থল রুট ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবারের মতো এই পথে গাজায় ত্রাণের গাড়ি ঢুকল বলে জানায় সংস্থাটি। বুধবার (১৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) ত্রাণসহায়তাকারী গাড়িবহর গাজা সীমান্ত বরাবর চলে যাওয়া একটি ইসরাইলি সামরিক রাস্তা ব্যবহার করেছে। গাজার উত্তরাঞ্চলের ২৫ হাজার মানুষের জন্য প্রায় ৮৮টন খাবার সরবরাহ করবে তারা।
ডব্লিউএফপির মুখপাত্র শাজা মোঘরাবি রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এতে প্রমাণ হয় যে, রাস্তা দিয়ে খাবার নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আমরা সহায়তার পরিমাণ আরও বাড়াব। গাজার উত্তরাঞ্চলের মানুষ যারা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে তাদের জন্য আমাদের সহায়তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। এজন্য গাজায় আমাদের সুনির্দিষ্ট ‘এন্ট্রি পয়েন্ট’ থাকা দরকার।’’
ইসরাইলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) ছয়টি খাবারের লরি গাজা সীমান্তসংলগ্ন একটি গেট অতিক্রম করে ভেতরে ঢুকেছে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাতে এই খাবারের লরিগুলো গাজা সীমান্ত অতিক্রম করেছে বলে জানায় ইসরাইল।
ফিলিস্তিনে আরও মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর অনুমোদন দিতে ইসরাইলের ওপর পশ্চিমাদের ক্রমাগত চাপের মুখে এমন পদক্ষেপ নিল দেশটি।
এর আগে দক্ষিণ গাজাসংলগ্ন কারেম শালোন ক্রসিংয়ে ত্রাণ লরিগুলোতে তল্লাশি চালিয়েছিল ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী।
ইসরাইলের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল পিটার লার্নার এক্স বার্তায় লিখেছেন, ‘গাজায় মানবিক সহায়তা সরবরাহের প্রবাহ বজায় রাখার জন্য আমরা ক্রমাগত সৃজনশীল উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।’
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) একটি দাতব্য সংস্থার উদ্যোগে ২০০ টন ত্রাণসহায়তা বহনকারী একটি নৌকাও সাইপ্রাস থেকে গাজার উদ্দেশে যাত্রা করেছে, এজন্য ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে একটি নতুন সামুদ্রিক করিডোর উদ্বোধন হয়েছে। এটি বৃহস্পতিবার গাজার উপকূলে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। যেখানে একটি জেটি তৈরি করা হচ্ছে।
এর আগে জাতিসংঘ জানায়, অন্তত ৫ লাখ ৭৬ হাজার ফিলিস্তিনি দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। গাজার উত্তরাঞ্চলের প্রায় ৩ লাখ ফিলিস্তিনি খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে ভুগছে বলেও সতর্ক করেছিল জাতিসংঘ।
গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ২৩ শিশুসহ ২৭ জন ফিলিস্তিনি অপুষ্টি এবং পানিশূন্যতায় মারা গেছেন।